ইদানীং স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশংকাজনক হারে
বেড়েই চলেছে। অন্যান্য অনেক ক্যান্সারের তুলনায় স্তন ক্যান্সারে প্রতিদিন
আক্রান্ত হন অনেক বেশী সংখ্যক নারী। শুধু তাই নয়, এই স্তন ক্যান্সারে
আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে পুরুষদেরও। তবে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত নারীর
সংখ্যা নিঃসন্দেহে বেশি। জরিপে দেখা যায় প্রতি ২৮ জন নারীর মধ্যে ১ জনের
স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের সম্ভাবনা রয়েছে। শুধু স্তন ক্যান্সারই নয়, স্তন
সংক্রান্ত আরও অনেক রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যায় নারীদের।
নিউইয়র্ক মেমোরিয়াল স্লোয়ান-কেট্টেরিং ক্যান্সার সেন্টারের
এমডি, ডেব্রা ম্যানজিনো বলেন, কমবয়েসি মেয়েদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি
বয়স্ক নারীদের তুলনায় অনেক কম। তবে যদি কোনো কারণে কমবয়সী নারী স্তন
ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে যান তবে রোগের মাত্রা বয়স্কদের তুলনায় অনেক বেশি
বেড়ে যায়। তাই সতর্ক থাকতে হবে অল্প বয়স থেকেই। স্তনের সুস্থতা নিশ্চিত
করতে জরুরী কিছু কাজ করা উচিত সকলেরই। স্তন ক্যান্সার ও স্তন সংক্রান্ত সকল
জটিলতা রুখে দেয়া সম্ভব একটি সুস্থ জীবনযাপনের মাধ্যমে।
(১) ওজন কমিয়ে ফেলুন
(১) ওজন কমিয়ে ফেলুন
ওজন বাড়ার সাথে সাথে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি
বেড়ে যায়। নিউইয়র্ক সিটি সেন্টার ফর ক্যান্সার অ্যান্ড প্রিভেনশনের এমডি
হ্যারল্ড ফ্রিম্যান এবং প্রেসিডেন্ট ও ফাউন্ডার রালফ লউরেন বলেন, স্তন
ক্যান্সারের ঝুঁকি মুক্ত থাকতে চাইলে অবশ্যই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত
জরুরী। তাই উচ্চতা ও বয়স অনুযায়ী ওজন সঠিক রাখার চেষ্টা করুন।
(২) নিয়মিত ব্যায়াম করুন
(২) নিয়মিত ব্যায়াম করুন
ব্যায়ামের মাধ্যমে দেহ সুগঠিত রাখা উচিত। কারণ ব্যায়ামের
মাধ্যমে ফিট থাকলে দেহের ইমিউন সিস্টেম অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
পায়, যার ফলে সহজে রোগাক্রান্ত হয় না। এছাড়াও নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে
এস্ট্রোজেন এবং ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
(৩) ধূমপান এবং মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন
(৩) ধূমপান এবং মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন
পুরুষের পাশাপাশি অনেক নারীই ধূমপান ও মদ্যপান করে থাকেন যা
একেবারেই উচিত নয়। ধূমপান ও মদ্যপান স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশে
বাড়িয়ে দেয়। গবেষণায় দেখা যায় প্রতিদিন ধূমপান ও মদ্যপান স্তন ক্যান্সারের
ঝুঁকি প্রায় ২১ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। মদ্যপানের পরিবর্তে আঙুরের রস পানের
অভ্যাস গড়ে তুলুন। আঙুরের খোসায় রয়েছে রেসভ্যারাট্রোল যা এস্ট্রোজেনের
মাত্রা কমিয়ে দেয়, সেই সাথে কমায় স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি।
(৪) শাকসবজি রাখুন খাদ্যতালিকায়
(৪) শাকসবজি রাখুন খাদ্যতালিকায়
কম ফ্যাট জাতীয় খাবার ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে দেয়
এবং সেই সাথে প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে। খাদ্যতালিকায় শাকসবজি, ফুলকপি,
বাঁধাকপি, ব্রকলি ধরণের সবজি রাখা উচিত সকলের। কারণ এই জাতীয় সবজির মধ্যে
রয়েছে সালফোরেফেইন যা দেহে ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি প্রতিহত করে। সব চাইতে
ভালো ফল পেতে এই জাতীয় সবজি কাঁচা খাওয়া উচিত।
(৫) স্তন সংক্রান্ত পারিবারিক বিষয়াবলী জেনে রাখুন
(৫) স্তন সংক্রান্ত পারিবারিক বিষয়াবলী জেনে রাখুন
নিউইয়র্ক সিটি সেন্টার ফর ক্যান্সার অ্যান্ড প্রিভেনশনের এমডি
হ্যারল্ড ফ্রিম্যানের মতে, ‘প্রায় ১৫% নারীর স্তন ক্যান্সারের মূলে থাকে
পরিবারের কারো স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের ঘটনা’ অর্থাৎ এটি অনেকাংশে বংশগত
একটি সমস্যা। পরিবারে কারো সত্ন ক্যান্সার হয়ে থাকলে এই রোগে আক্রান্তের
ঝুঁকি অনেকটা বেড়ে যায়। সেক্ষেত্রে আরও বেশি সচেতন হওয়া প্রয়োজন। তাই বংশে
আর কারো এই রোগ রয়েছে কিনা তা সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত।
(৬) নিয়মিত চেকআপ করান
(৬) নিয়মিত চেকআপ করান
প্রতি ৩ বছরে অন্তত ১ বার নিয়মিত স্তন পরীক্ষা করানো উচিত
প্রত্যেক নারীর। এবং ৪০ বছর বয়স্ক নারীদের ক্ষেত্রে তা প্রতি বছরে ১ বার
মেমোগ্রাফ করা উচিত। যাদের বংশে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের ঘটনা দেখা যায়
তাদের আরও বেশি সতর্কতার সাথে নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত। প্রয়োজনে
মেমোগ্রাফের পাশাপাশি এমআরআই ও সোনোগ্রাম করানো উচিত নিয়মিত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন